শনিবার, ১ জানুয়ারী, ২০১১

বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ৩১ মে ২০১০ “প্রতিদিনই হোক তামাকমুক্ত দিন’’

বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ৩১ মে ২০১০
“প্রতিদিনই হোক তামাকমুক্ত দিন’’

প্রতিবছরের মতো এ বছরও উদযাপিত হতে যাচ্ছে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। এ বছর বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের প্রতিপাদ্য "এবহফবৎ ধহফ ঃড়নধপপড় রিঃয ধহ বসঢ়যধংরং ড়হ সধৎশবঃরহম ঃড় ড়িসবহ". বাংলায় “তামাকের আগ্রাসী বিপনন মহিলা ও শিশু স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি’’। ’’প্রতিদিনই হোক তামাকমুক্ত দিন’’।

বাংলাদেশে ৪৩.৩ % প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ কোন না কোনভাবে তামাক ব্যবহার করে। ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহার নারীদের মাঝে বেশি। নারীদের মাঝে ২৮% এবং পুরুষদের মাঝে ২৬% ধোয়াবিহীন তামাক ব্যবহার করেন। এছাড়া ৪৫% পুরুষ এবং ১.৫% নারী সিগারেটের মাধ্যমে এবং ২১% পুরুষ ও ১.১% নারী বিড়ির মাধ্যমে ধূমপান করেন। বাংলাদেশে ৪৯০০০ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হচ্ছে। তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহারের কারণে বাংলাদেশে প্রতিবছর ৫৭,০০০ লোক মারা যায় এবং ৩৮২০০০ লোক পঙ্গুত্ব বরণ করছে। তামাকের ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তির পরিমান ৫০০০ কোটি টাকা।

উপরের তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করলে সহজেই অনুমান করা যায় তামাক ব্যবহার আমাদের মানুষের স্বাস্থ্য, অর্থনীতি ও পরিবেশের জন্য তিকর। জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নের ল্েয তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য বাংলাদেশ সরকার কতিপয় পদপে গ্রহণ করেছে। এ সকল কার্যক্রমের মধ্যে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫ প্রণয়ন অন্যতম।

তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার হ্রাস একটি জটিল প্রক্রিয়া। তামাক কোম্পানির মতো স্বার্থনেষী ব্যবসায়িক গোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি, ধূমপায়ীদের অভ্যাসের পরিবর্তন এবং অধূমপায়ীদের রা করার একটি কঠিন ও সময় সাপে কাজ। এ কাজের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপো করার পাশাপাশি ক্রমাগতভাবে তামাক নিয়ন্ত্রণের কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

কিছু নীতি বিষয়ক কাজ আছে, যার মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম গতিশীল করা হয়। যেমন তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের ধূমপানমুক্ত স্থানের উদ্দেশ্য হচ্ছে পরো ধূমপানের তি হতে অধূমপায়ীকে রা এবং ধূমপায়ীকে যতবেশী সময় ধূমপান হতে বিরত রাখা । বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ সংক্রান্ত ধারার উদ্দেশ্য হচ্ছে নতুন তরুনদের ধূমপানে উদ্বুদ্ধ হতে বিরত রাখা এবং বিদ্যমান ধূমপায়ীদের সাথে কোম্পানির উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রমে যোগাযোগ বিঘিœত করা। মোড়কে ছবিসহ সতর্কবানীর উদ্দেশ্য হচ্ছে ধূমপায়ীদের তামাকের তিকর দিক সম্পর্কে সরাসরি সচেতন করা। সর্বোপরি তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধির উদ্দেশ্য হচ্ছে দাম বৃদ্ধির মাধ্যমে ধূমপায়ীদের ধূমপান ত্যাগে সহযোগিতা করা।

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন:
ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫ বিষয়ে আলোচনার শুরুতে এ আইনের বাস্তবায়ন হচ্ছে না বলে কেহ কেহ অভিমত ব্যক্ত করেন। কিন্তু এষড়নধষ অফঁষঃ ঞড়নধপপড় ঝঁৎাবু এবং ওঞঈ ইধহমষধফবংয ঘধঃরড়হধষ জবঢ়ড়ৎঃ ড়হ ঊাধষঁধঃরড়হ ড়ভ ঞড়নধপপড় ঈড়হঃৎড়ষ চড়ষরপরবং রহ ইধহমষধফবংয ২০০৯ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে অগ্রগতি হয়েছে। মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি, পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে ধূমপান হ্রাস পেয়েছে, দেশের অনেক প্রতিষ্ঠানে ধূমপানমুক্ত সাইন স্থাপনসহ ধূমপানমুক্ত স্থান সংরতি হচ্ছে। প্রিণ্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন বন্ধ হয়েছে, সিগারেটের প্যাকেটে লিখিত সর্তক বানী প্রচার হচ্ছে, যা নিঃসন্দেহে আইন প্রণয়নের ফলাফল। এ অর্জন সরকার, তামাক নিয়ন্ত্রণ সংগঠন ও গণমাধ্যমের সম্মিল্লিত প্রয়াস।

তবু বলা যেতে পারে আইনের অগ্রগতি প্রত্যাশিত মাত্রায় নয়। এখনো আইন অনুসারে সকল পাবলিক প্লেস ও পরিবহন ধূমপানমুক্ত নয়। এসকল স্থানে ধূমপানমুক্ত সাইন স্থাপনও সম্ভব হয়নি। তামাক কোম্পানিগুলো আইন লঙ্ঘন করে পরো বিজ্ঞাপন প্রচার করছে, কিছু কোম্পানি প্যাকেটের গায়ে আইন অনুসারে সতর্কবাণী প্রচার করছে না, তামাক চাষের বিকল্প ফসলের সুবিধা নিশ্চিত করা যায়নি এবং তামাক ব্যবহার ও শিল্প স্থাপনে নিরুৎসাহিত করতে নীতিমালা বা কোন ধরনের পদপে গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।



তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন :
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন এখন সময়ের দাবি। আইনের সীমাবদ্ধতার কারণেও অনেক েেত্র আইনটি সুফল জনগনের নিকট তুলে দেওয়া যাচ্ছে না। আশার কথা হচ্ছে সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি উন্নয়নের ল্েয একটি কমিটি গঠন করেছে। উক্ত কমিটি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মতামতের উপর ভিত্তি করে ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয়ে একটি খসড়া প্রস্তাবনা পেশ করেছে। উক্ত খসড়া প্রস্তাবনার বিষয়ে পুনরায় সকলের নিকট মতামত আহবান করা হয়েছে। আমরা আশা করি সরকার এফসিটিসি-র আলোকে আগামী ঈড়হভবৎবহপব ড়ভ ঃযব চধৎঃু (ঈঙচ) -র সভার পূর্বে আইনটি সংশোধন করবে।

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন উন্নয়ন বিষয়ে বিভিন্ন আলোচনার প্রেেিত তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মীরা পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে ধূমপানের স্থান সংক্রান্ত বিধান বাতিল করা; সকল তামাকজাত দ্রব্যকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা; প্রত্য ও পরো তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ, তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে ৫০ শতাংশ জায়গা জুড়ে তিকর দিক তুলে ধরে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবানী প্রদান; সামাজিক দায়বদ্ধতার নামে তামাক কোম্পানির লগো ব্যবহার করে প্রমোশনাল কার্যক্রম নিষিদ্ধ; তামাকজাত দ্রব্যের মোড়ক বা কৌটার অনুরূপ বা সাদৃশ্যে অন্য কোন প্রকার দ্রব্যের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা; তামাক কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে যে কোন নাগরিককে মামলা করার অধিকার প্রদান; আইনভঙ্গের প্রেেিত তামাক কোম্পানিগুলোর জরিমানা ও শাস্তির পরিমান বৃদ্ধি; তামাকের বিকল্প চাষ ও কর বৃদ্ধির জন্য নীতিমালা প্রণয়ন, তামাক কোম্পানিগুলো হতে স্বাস্থ্যকর (ঐবধষঃয ঞধী) নামে কর আদায়, কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিধি বৃদ্ধি এবং ধূমপানমুক্ত স্থান তৈরির করতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপরে শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়গুলো আইনে যুক্ত করার সুপারিশ করেন।

তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধি:
দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষণায় দেখা যায় তামাক ব্যবহার হ্রাসে তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধি একটি কার্যকর উপায়। তামাক নিয়ন্ত্রণ চুক্তি এফসিটিসি অনুসারে তামাকজাত দ্রব্যের উপর বৃদ্ধির ল্েয সরকারী পর্যায়ে পদপে গ্রহণ করা প্রয়োজন। অথচ বিগত কয়েক বছরে তামাকজাত দ্রব্যের উপর মুদ্রাস্ফীতি অনুসারে কর বৃদ্ধির কোন পদপে গ্রহণ করা হয়নি। বরং অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের তুলনায় তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য হ্রাস পেয়েছে। সস্তায় তামাকজাত দ্রব্য প্রাপ্তির প্রেেিত তামাকের ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিগত বছরে সরকার তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধির পদপে গ্রহণ করলেও কোম্পানিগুলোর ভ্রান্ত প্রচারণার কারণে তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়নি।

তামাক কোম্পানিগুলো কর বৃদ্ধি হলে রাজস্ব এবং কর্মসংস্থান হ্রাস পাবে বলে কর বৃদ্ধির বিরোধীতা করে থাকে। গবেষণায় দেখা যায়, কর বৃদ্ধি হলে তামাক ব্যবহার হ্রাস পেলেও দাম বৃদ্ধির প্রেেিত সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে। বিশ্ব ব্যাংকের এক গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশ তামাক নিয়ন্ত্রণ হলে ১৮.৭% চাকুরি বৃদ্ধি পাবে।

তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধির মাধ্যমে আদায়কৃত অতিরিক্ত রাজস্ব সরকার প্রয়োজনে দরিদ্র লোকদের বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য ব্যয় করতে পারে। তামাককের উপর কর বৃদ্ধির ফলে সরকার তিনভাবে লাভবান হবে, প্রথমত রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে, দ্বিতীয়ত জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন হবে, তৃতীয় তামাক হতে আদায়কৃত রাজস্ব তামাক শ্রমিকদের বিকল্প কর্মসংস্থানে ব্যয় করা সম্ভব হবে।

প্রায়ইশ কোম্পানিগুলো অনেক টাকা রাজস্ব দেয় বলে নিজেদের জাহির করতে চায়। আমাদের একটি কথা স্মরণ রাখা প্রয়োজন কোম্পানিগুলো মূলত জনগণের কাছ থেকে সংগৃহীত ভ্যাট রাজস্ব খাতে জমা দেয়, ভ্যাট পুরোটাই জনগনের টাকা। মাত্র ১৫% ভ্যাটের টাকা রাজস্ব খাতে দিয়ে, জনগন ও সরকারের উপর রোগ ও অসুস্থ্যতার বোঝা চাপিয়ে কি পরিমান অর্থ লাভ হিসেবে নিয়ে যাচ্ছে তা সহজেই অনুমেয়। আমরা আশা করি জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও স্বাস্থ্য সম্মত কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে এ বাজেটে সরকার সকল ধরনের তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় পদপে গ্রহণ করবে।

খাদ্যের জমিতে, তামাক চাষ- আমাদের শংকা:
এ বছর বাংলাদেশে তামাক চাষ আংশকাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক এক নির্দেশনায় তামাক চাষ ও তামাক উৎপাদন প্রক্রিয়ায় কোন প্রকার আর্থিক সাহায্য না করার জন্য দেশের সব সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক-কে নির্দেশনা জারি করে । তামাক চাষ নিরুৎসাহিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক এর এই নির্দেশনা দেশের জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ, অর্থনীতি উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস। তামাক কোম্পানিগুলো বিভিন্ন মিথ্যা প্রলোভনের মাধ্যমে চাষীদের তামাক চাষের জন্য উদ্বুদ্ধ করছে।

অধিক জনসংখ্যার সীমিত ভুখন্ডের এ দেশ। খাদ্যের জমিতে তামাক চাষ দেশের খাদ্য নিরাপত্তা, পরিবেশ, জনস্বাস্থ্যকে হুমকির মুখে ফেলছে। পাশাপাশি তামাক চাষ দরিদ্রতা ও পুষ্টি ঘাটতি বৃদ্ধির জন্য দায়ী। তামাক পাতা শুকানোর জন্য প্রতিবছর দেশের বনাঞ্চল ধবংস হয়ে যাচ্ছে, বিনষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। গবেষনায় দেখা যায় তামাক চাষের সময়ে স্কুলে বাচ্চাদের উপস্থিতির হার কমে যায়।

তামাক চাষে অনেক শ্রমের প্রয়োজন এবং প্রক্রিয়াটি অনেক কঠিন। তামাক চাষের সঙ্গে সম্পৃক্তদের হাঁপানিসহ শ্বাস ও চর্মজনিত রোগের বিস্তার ল্য করা যায়। এছাড়া মারত্মক বার্জাজ ডিজিজ এর মত ভয়াবহ রোগও ল্য করা যাচ্ছে। তামাক চাষের কারণে জমির উর্বরতা শক্তি কমে যায় এবং ১০ বছর পর সে জমি সম্পূর্ণভাবে চাষ অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এসব দিক বিবেচনায় নিয়ে তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণে আরো কঠোর কার্যক্রম দরকার।

জাতীয়, জেলা ও উপজেলা ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) টাস্কফোর্স
তামাক আইন বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সরকার জাতীয়, জেলা ও উপজেলা ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) টাস্কফোর্স গঠণ করেছে। প্রশাসন, মিডিয়া ও তামাক বিরোধী সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত এ কমিটি তামাক নিয়ন্ত্রণে একটি শক্তি কেন্দ্র। কিন্তু নানা সীমাবদ্ধতার কারণে জাতীয়, জেলা ও উপজেলা ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) টাস্কফোর্স-র সভায় নিয়মিত অনুষ্ঠিত হচ্ছে না এবং কার্যক্রমও গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

তথাপিও দেশের অনেক স্থানের টাস্কফোর্স তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে অনেক অনুকরণীয় সিদ্ধান্ত ও পদপে গ্রহণ করেছে। তামাক নিয়ন্ত্রণ টাস্কফোর্সকে প্রশিন, উপকরণসহ নানা সুবিধা প্রদাণ এবং এর মাধ্যমে মনিটরিং-র কার্যক্রম নিশ্চিত করা সম্ভব হলে স্থানীয় পর্যায়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম আরো গতিশীল হবে।

অভিজ্ঞতায় দেখা যায় টাস্কফোর্স সদস্যদের কার্যালয় ও অধিনস্ত্য প্রতিষ্ঠান ধূমপানমুক্তকরণ, সদস্যদের উদ্যোগে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, তামাক বিরোধী সচেতনতামূলক কার্যক্রম, টাস্কফোর্সের সভা তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন কার্যক্রমকে গতিশীল করার পাশাপাশি টাস্কফোর্সের কার্যক্রম সম্পর্কে জনগণের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

৬. তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক দতা বৃদ্ধি ও সচেতনতা
তামাক নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের দতা বৃদ্ধির ল্েয বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগ দতা বৃদ্ধির পদপে গ্রহণ করা হচ্ছে। তামাক বিরোধী সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, এনজিও, সিবিও, সিভিল সোসাইটি ও গনমাধ্যমের কর্মীদের তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে দতা বৃদ্ধির ল্েয বিভিন্ন সংগঠন কাজ করছে। বিগত বছরে সরকারীভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও দি ইউনিয়নের সহযোগিতায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের সাথে জড়িত সরকারী কর্মকর্তাদের দতা বৃদ্ধির ল্েয কর্মশালা আয়োজন করা হয়। তবে এ ধরনের কর্মশালা আরো বৃদ্ধি করা প্রয়োজন বলে বিভিন্ন কর্মশালা ও সেমিনারে অভিমত ব্যক্ত করা হয়।

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পালণ ও তামাকজাত দ্রব্যের তিকর দিক বিষয়ে সরকারীভাবেও সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। সরকারের সহযোগি স্বেচ্ছাসেবী তামাক নিয়ন্ত্রণ সংগঠনগুলো এেেত্র সক্রিয়ভাবে তামাক বিরোধী সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এর মধ্যে বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড, পোষ্টার, স্টিকার, লিফলেট, ভ্রাম্যমান গানের দল, পথ নাটক, বিভিন্ন ক্যাম্পেইন অন্যতম। তবে জনসংখ্যার অনুপাতে এ সকল কার্যক্রম খুবই অপ্রতুল। সরকাররের এেেত্র সক্রিয়ভাবে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক দতা ও সচেতনতা বৃদ্ধির েেত্র সরকারী ও স্বেচ্ছাসেবী তামাক নিয়ন্ত্রণ সংগঠনগুলো মাঝে আরো বেশি সমন্বয় সাধন জরুরি।

পরিশিষ্ট: তামাক নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের অর্জন অনেকখানি। কিন্তু তামাক কোম্পানিগুলো প্রতিনিয়ত দেশের এই অর্জনকে বাধাগ্রস্ত করতে অব্যাহত প্রয়াশ চালাচ্ছে। তামাক নিয়ন্ত্রণ ও তামাক বিরোধী সংগঠনগুলো বিষয়ে নেতিবাচক প্রচারণা তাদের এ সকল কার্যক্রমের অন্যতম হাতিয়ার। কোম্পানিগুলো ব্যবসার স্বার্থে নানাভাবেই দেশের তামাক বিরোধী কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতে চাচ্ছে।

তামাক কোম্পানি তাদের মুনাফার উদ্দেশ্যে মানুষকে রোগ ও মৃত্যুর দিকে ঢেলে দিচ্ছে, অপর দিকে তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মীদের উদ্দেশ্য মানুষের স্বাস্থ্যকে রা করা। মানুষের স্বাস্থ্য অপো অর্থ কখনোই মুখ্য হতে পারে না। সরকার, প্রশাসন, তামাক নিয়ন্ত্রণ সংগঠন, গণমাধ্যমকর্মীদের পারস্পরিক সহযোগিতা ও সম্মিলিত পদপে কোম্পানির অশুভ উদ্দেশ্য প্রতিহত করে জনগনের স্বাস্থ্যকে রা করবে এ আমাদের বিশ্বাস।

বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসে তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম গতিশীল করতে সুপারিশ:
১. তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের মনিটরিং জোরদার, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, ধূমপানমুক্ত সাইন স্থাপন;
২. টাস্কফোর্স সদস্যদের কার্যালয় ও অধিনস্ত্য প্রতিষ্ঠান ধূমপানমুক্তকরণ,
৩. এফসিটিসি-র আলোকে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের দ্রুত পদপে গ্রহণ, স্থানীয় পর্যায়ে জনমত সৃষ্টি করা;
৪. বিড়ি-সিগারেটসহ সকল তামাকজাত দ্রব্যের উপর উচ্চহারে কর বৃদ্ধি করা। কর বৃদ্ধির অর্থে দরিদ্র বিড়ি শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের এবং তামাকজনিতর রোগের চিকিৎসায় ব্যয় করা;
৫. পরিবেশ, অর্থ, স্বাস্থ্য রায় তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণে দ্রুত পদপে গ্রহণ;
৬. আইন বাস্তবায়নের সাথে সম্পৃক্ত প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দতা বৃদ্ধির ল্েয পদপে গ্রহণ;
৭. তামাক বিরোধী সচেতনতামূলক কার্যক্রম বৃদ্ধির ল্েয সরকারীভাবে উদ্যোগ গ্রহণ;
৮. সরকারীভাবে নিয়মিত গণমাধ্যমকে তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক কার্যক্রম বিষয় তথ্য প্রদানের প্রক্রিয়া তৈরি;
৯. জেলা ও উপজেলা তামাক নিয়ন্ত্রণ টাস্কফোর্স-র প্রশিন, উপকরণসহ নানা সুবিধা ও মনিটরিং নিশ্চিত করা;
১০. সরকার, স্থানীয় সরকার, দেশীয় দাতা গোষ্ঠীগুলোর সহযোগিতায় স্থানীয় পর্যায়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ সৃষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় পদপে গ্রহণ;

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন