শনিবার, ১ জানুয়ারী, ২০১১

পরিবেশের উপর তামাকের তিকর প্রভাব

পরিবেশের উপর তামাকের তিকর প্রভাব

তামাকের তিকর প্রভাবের কথা আসলেই আমারা স্বাস্থ, অর্থনৈতিক তি নিয়ে বলি কিন্তু এর কৃষি, পরিবেশগত দিক তেমন গুরুত্ব পায় না। তামাক শুধুমাত্র স্বাস্থ, অর্থনৈতিক তিই করছে না এর পরিবেশগত তিও মারাত্বক। যা মানবজাতি, জীব বৈচিত্র্যের অস্তিত্বকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের নিজেদের অস্তিত্বের স্বার্থেই পরিবেশগত তি বিবেচনা করে তা সমাধানে তামাক নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে আসতে হবে।

মানুষের বেঁচে থাকার অন্যতম প্রয়োজন খাদ্য। অথচ তামাক চাষের জন্য বেছে নেয়া হচ্ছে খাদ্য উৎপাদনের জমি এবং উৎপাদিত তামাক শুকানোর জন্য বন ধবংস করে গাছ কেটে জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এক সমীায় দেখা যায়, প্রতিবছর তামাক উৎপাদনের কারনে ২ ল হেক্টর বন ধবংস হচ্ছে। তামাক শুকানোর জন্য গাছ কাটার ফলে চট্টগ্রামের পাহড়ী এলাকায় বনাঞ্চল ধবংশ হচ্ছে। এক একর জমিতে যে পরিমান তামাক উৎপন্ন হয় এটি শুকানোর জন্য প্রয়োজন প্রায় ৬ টন কাঠ। এভাবে তামাক শুকানোর কাজে বন ধবংশ করার কারইে এবং এর থেকে উৎপন্ন ধোয়ার ফলে বিলীন হয়ে পড়ছে জীববৈচিত্র্য। বন কেটে উজাড় করার কারনে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে মাটি ধারন মতা ফলে আমাদের ভূমি ধসের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে প্রকৃতি তথা জলবায়ু এবং আমরা সম্মুখীন হচ্ছি প্রাকৃতিক দূর্যোগের।

তামাক চাষে শুধু গাছ কেটেই পরিবেশ ধ্বংশ করা হচ্ছে না। এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে পানির উপরও। তামাক চাষে প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়। তাই পার্বত্য এলাকায় তামাক কোম্পানীগুলো চাষের ল্েয নদীর ঢালকে বেছে নেয়। পাহাড়ী এলাকায় নদীগুলো ঐ এলাকার মানুষের অন্যতম পানির উৎস। তামাক চাষে প্রচুর পরিমাণে কীটনাশক এবং রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারের ফলে তা স্থানীয় পানির প্রবাহকে দূষিত করে। গৃহস্থালীর কাজে দূষিত পানি ব্যবহার করার ফলে তারা বিভিন্ন জটিল স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে এবং দেখা দিচ্ছে সুপেয় পানির অভাব। দূষিত পানির ফলে শুধুমাত্র মানব জাতিই নয় পানির নিচে বসবাসরত জীব বৈচিত্রও হুমকীর সম্মুখীন হচ্ছে।

তাছাড়া উর্বরতা বৃদ্ধির এবং পোকামাকড়ের আক্রমন থেকে রা করার ল্েয ব্যবহূত প্রচুর পরিমাণ সার ও কীটনাশক জমি থেকে গড়িয়ে নদীর পানিতে গিয়ে মেশে। আবার তামাক শুকানোর পর গাছ, খড় বা কুড়া পোড়ানোর ছাই নদী, পুকুরে ফেলে দেয়। ফলে পুকুরের জলজ প্রাণী বিশেষ করে মাছ তিগ্রস্থ হচ্ছে। তিগ্রস্থ হচেছ এদের প্রজনন মতার। বর্তমানে আমাদের অনেক প্রজাতীর দেশীয় মাছ, জলজ প্রাণী বিপন্ন হয়ে গেছে এবং আরো কিছু মাছ এবং জলজ প্রাণী বিপন্ন হওয়ার পথে।

তামাক গাছ মাটির পুষ্টি দ্রুত শেষ করে ফেলে। ফলে েেত প্রতিবার চাষের জমিতে দামী রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে হয়। এক হিসাবে দেখা গেছে প্রতি একর জমিতে তামাক চাষের জন্য ৩০০ কিঃ গ্রাঃ সার ব্যবহার করা হয়। এতে সাময়ীকভাবে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পেলেও ধীরে ধীরে মাটির উর্বরতার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান যেমন পটাসিয়াম, ফসফরাস, নাইট্রোজেন ইত্যাদির পরিমাণ কমে যায় এবং মাটির উর্বরতা নষ্ট হয়ে যায়। তাছাড়া যেসব দেশে পাহাড়ী অঞ্চলে তামাক চাষ করা হয়, সেসব এলাকাতে মাটির রাসায়নিক পদর্থগুলো কমে যাবার কারণে ভূমি ধবংস দেখা দেয়। তাছাড়া সিগারেটের পিছনের অংশ, প্যাকেট এবং কার্টুন নষ্ট করতে গিয়ে বিভিন্ন বর্জ্য তৈরি হচ্ছে। শুধু তাই নয় তামাক ব্যবহারের কারনে প্রচুর অগ্লিকান্ড সংগঠিত হয়। যা আমাদের অর্থনৈতিক তি ছাড়াও প্রাণ হানীর কারণ যা অপূরনীয়।

আমাদের অস্তিত্ব রার স্বার্থে এখনই তামাকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। খাদ্য উৎপাদনের যে জমি তামাক চাষের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে তা বন্ধ করতে তামাক চাষের তিকর প্রভাব সম্পর্কে কৃষকদের সচেতনতার পাশাপাশি বিকল্প ফসল উৎপাদনে সহযোগিতা প্রদান করতে হবে। পরিবেশ রার সার্থে তামাক শুকানোর জন্য বন ও গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে। কোন একক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পে এত বড় কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব নয়, প্রয়োজন সকলের সম্মিলিত উদ্যোগ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন