সোমবার, ১৯ জুলাই, ২০১০

নিরাপত্তাহীনতা ও স্বাস্থ্য ঝুকিতে পথচারী

নিরাপত্তাহীনতা ও স্বাস্থ্য ঝুকিতে পথচারী
জেব্রা ক্রসিংগুলো নিশ্চিত: ফুটওভারব্রিজ পথচারীবান্ধব নয়

সিটিকর্পোরেশন, পরিবেশ অধিদপ্তর, রাজউক এবং ট্রাফিক পুলিশের অবহেলা ও উদাসীনতার কারণে নিরাপত্তাহীনতা ও স্বাস্থ্য ঝুকিতে পথচারী। আর্দশ নগর যোগাযোগ ব্যবস্থায় পথচারী পারাপারের চলাচলের জন্য ভাল ফুটপাত ও জেব্রা ক্রসিং থাকার প্রয়োজন হলেও, ঢাকা শহরের অধিকাংশ এলাকায় জেব্রা ক্রসিং নেই। অপর দিকে ফুটপাতগুলো পরিবেশ সম্মত নয় এবং ফুটপাত দখলের জন্য হকারদের দোষী করা হলেও, ঢাকা অধিকাংশ ফুটপাত এখন দখল করে রাখবে প্রাইভেট গাড়ী। পথচারী পারাপারের জন্য ঢালাওভাবে ফুটওভার ব্রিজ তৈরির কথা বললেও, ফুটওভারব্রিজ মহিলা, শিশু, বৃদ্ধ, মালামালবহনকারী বা প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্যব্যহারের অনুনোপযোগী। অপর দিকে প্রচন্ড শব্দদূষণ ও বায়ুদুষণের কারণে পথচারীরা শারিরীক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

ফুটপাত, জ্রেবা ক্রসিং, বায়ু ও শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য সিটিকর্পোরেশন, পরিবেশ অধিদপ্তর, রাজউক এবং ট্রাফিক পুলিশ বিভাগগুলোর পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের দায়িত্ব থাকলেও এ প্রতিষ্ঠানগুলোর মাঝে পথচারীদের অধিকার রক্ষায় নেই কোন সমন্বয় ও পরিকল্পনা। দিনের পর দিন পরিকল্পনা আর প্রকল্পের সুপারিশে বন্দী পথচারীদের অধিকার। প্রকল্প, লোকদেখানো কার্যক্রম আর গতানুগতিক কার্যক্রমের কাছে আসহায় প্রায় অধিকাংশ মানুষের চলাচল ব্যবস্থা।

ঢাকার যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রণীত এসটিপি পরিকল্পনায় পথচারীদের অগ্রাধিকার প্রদানের কথা বলা হলেও, বাজেটে তার কোন বরাদ্ধ নেই। ফুটপাত ভাঙ্গাগড়া এবং হকার উচ্ছেদের মাঝেই ফুটপাত উন্নয়নের কাজ সীমাবদ্ধ। পরিবেশবিদ ও নগর যাতায়াত গবেষকদের মতে ফুটপাতগুলোকে পথচারীবান্ধব করতে গাছের ছায়া, বসার ব্যবস্থা, নির্দিষ্ট দুরুত্বে টয়লেটের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। পথচারীদের জন্য ফুটপাত নিরাপদ এবং আকৃষ্টময় করতে ফুটপাতের পাশে হকারদের লাইসেন্স-র এর মাধ্যমে বসার ব্যবস্থা করার সুপারিশ করেন। গবেষকদের মতো পথচারীদের হাটাঁর অভ্যাস বৃদ্ধির মাধ্যমে সরকার যানজট নিয়ন্ত্রণ, সামাজিক সম্পর্ক বৃদ্ধি এবং রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থার বিষয়কগুলো নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালণ করতে পারে।

এসটিপি পরিকল্পনায় পথচারীদের অগ্রাধিকার থাকলেও সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো যানবাহনের সুবিধা এবং বানিজ্য নির্ভর প্রকল্প ফ্লাইওভার, পার্কিং, ওভারপাস ইত্যাদি ব্যবসা নির্ভর প্রকল্প নিয়ে ব্যস্ত। রাজউক মার্কেট বা আবাসন প্রকল্পে গাড়ীর পার্কিং সুবিধা নিশ্চিত করলেও, পথচারীদের যাতায়াতের জন্য কোন নির্দেশনা প্রদানের করছে না। সিটিকর্পোরেশন, ট্রাফিক পুলিশ এবং রাজউকের উদাসীনতা বা অবহেলার ঢাকার মতো মেগাসিটি পথচারীদের নিরাপত্তা বিঘ্ন হচ্ছে। রাস্তা পরাপার করতে গিয়ে মানুষ আহত হচ্ছে। শিশু, বৃদ্ধ, মহিলা ও প্রতিবন্ধীদের জন্য এ শহরের হাটার পরিবেশ নেই।

শব্দদুষণ ও বায়দুষণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যক্রম বিভিন্ন প্রকল্পেই সীমাবদ্ধতা। বাস্তবায়নে অধিদপ্তর কখনো কখনো মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে। শব্দদুষণ ও বায়দুষনের জন্য জরিমানার ক্ষমতা পরিবেশ অধিদপ্তরের নিকট থাকায় ট্রাফিক পুলিশ শব্দদুষণ ও বায়দুষনের ক্ষেত্রে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারছে না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন